কত নম্বর গিয়ারে কত স্পিড
আজকের লেখাটি তাদের জন্য একদম যারা নতুন বাইক রাইড কারণ শিখেছেন তাদের জন্য বাইক রাইট করানোর সময় আমরা অনেকেই আসলে জানি না বা কোথায় বুঝতে পারি না যে আসলে কত স্পিডে কত গিয়ার দিতে হবে। বাইক চালানোর সময় কত নম্বর গিয়ারে কত স্পিড রাখবেন। সত্যিই কথা বলতে যদি হয় আসলে কোথায় লেখা বা লিখিত পাইনি কোনোধরনের নথি কত স্পিডে কত গিয়ারে ফেলতে হবে। কিন্তু আমরা যারা নতুন অবস্থায় বাইক চালাতে শিখি বা চালিয়ে যাচ্ছি তাদের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম অবশ্যই মেনে চলতে হবে। আজকের এই লেখার মাধ্যমে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করবে ততক্ষণে সঙ্গে থাকবেন। আপনার বাইক চালানোর সময় কত স্পিডে কত গিয়ারে রাখবেন। তবে এটা জরুরি যে, জ্বালানি সাশ্রয় করাটা আমাদের প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিত। আপনি দ্রুত সময়ে মধ্যে দূর্ঘটনা পড়তে না চান ও জ্বালানি সাশ্রয়ী বাইকার হতে চান তাহলে ১ নং গিয়ারে ১০-১৫ স্পিড,২ নং গিয়ারে ২২-২৮ স্পিড, ৩ নং গিয়ারে ৩২-৪০ স্পিড, ৪ নং গিয়ারে ৪০-৪৮ স্পিড, ৫ নং গিয়ারে ৫৮ থেকে নিজের প্রয়োজন মত চালাবেন তাহলে দিনশেষে জ্বালানি সাশ্রয়ী ও নিরাপদ ড্রাইভ শেষে বাসায় ফিরতে পারবেন।
আপনার বাইকটি যখন স্ট্যার্ট দিবেন এক নম্বরে গিয়ায়ে দিয়ে চালানো শুরু করবেন। বাইকটি স্পিড যখন দশ বা পনের উপরে স্পিড উঠবে তখন দ্বিতীয় গিয়ারে শিফট করবেন। এরপরে যেটি করবেন ২০--৩০ স্পিডে উঠে যাবে তক্ষুণি তৃতীয় গিয়ায়ে শিফট করে নিবেন। এতে করে কি জানেন ? বাইকটি ইঞ্জিন সাউন্ড পরিবর্তন হবে বাইকটি আগের তুলনায় ইসমুথলি চলবে আপনি তখন বাইক চালাতে অনেকটা আরাম পাবেন নিশ্চিত। পরের ধাপে যেটি আপনি করতে থাকবেন বাইকটি স্পিড ৪০ উপরে উঠে গেলে ফোর্থ বা চার নম্বরে গিয়ারে শিফট করে নিবেন। যদি আপনার বাইকটি মোট চারটি গিয়ার থাকে তাহলে চার নম্বরে গিয়ে দেখেশুনে যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকু উঠানোর চেষ্টা করবেন। তবে হ্যাঁ, রাস্তা কন্ডিশন অনুযায়ী বাইকের স্পিডের তারতম্য ঘটবে এটা স্বাভাবিক যা আপনাকে মেনে চলতে হবে। আর হ্যাঁ, এখনকার অধিকাংশ বাইক রাস্তায় দেখতে পাওয়া যায় ১৫০ সিসি আর ১৫০ সিসি বাইকে মোট গিয়ার থাকে মোট পাঁচটা। আরও বিস্তারিত বলার আগে আমার বাইক চালানোর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা কিছু শেয়ার করলে আমার মনে হয় আপনার বরং উপকার হবে।
আমার বাইক চালানোর অভিজ্ঞতা মোটামুটি ১১ মাসের মতন। প্রায় ৯,০০০ কিলোমিটার বাইক রাইড করেছি। বলে রাখি এটা আমার মনে হয়েছে শুধুমাত্র (নতুন বাইকরাদের) জন্য হলেও প্রথম বাইক রাইড অভিজ্ঞতা শেয়ার করা জুরুরি। সত্যি কথা বলতে বাইক যেদিন বুকিং দিয়েছিলাম সেই দিনের আগ পর্যন্ত আমার কোনোধরনের বাইক চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল না। ১৫ অক্টোবর ২০২৩ সালে বাইক শোরুম থেকে আনছিলাম তখনো পর্যন্ত ভয়ে ভয়ে ছিলাম এতো ওজন বাইক কিভাবে চালাবো (আর হ্যাঁ, বাইকটা আনছিল আমার ভাগ্নে)। আমাকে অনেকের বলেছে এতো ওজনে বাইক প্রথমে কিনতে গিলে ক্যানো আমার মা তো সবসময়ই জন্য কান্নাকাটি মধ্যে দিয়ে সেই দিনটি পার করে গেছে। শোরুম থেকে আসতে আসতে রাত্র ০৯:৩০ মিনিট। রাতের খাবার খাওয়া শেষে বিসমিল্লাহ বলে গ্যারেজ থেকে বের হলাম। আমার গ্যারেজ ছিল বেশ উঁচু। গ্যারেজ থেকে বাইকটা স্ট্যার্ট দিয়ে এক গিয়ারে ৫ অথবা ৮ স্পিড আগালাম মনের একটু সাহস সঞ্জয় হল আমার। বাইকটি সামনে এবিএস থাকার কারণে সাবধানে সহিত নামাতে সক্ষম হলাম। তখন আর আমার বুকের ভিত্তরে আর কাপাকাপি করেনি। ভাগ্নাকে রাখছিলাম বাইক চালানো শিখবো বলে। সত্যিই কথা বলতে কি বাইক চালানোর শিখতে কাউকে লাগেনি আমার। এক গিয়ারে দিয়ে গলি পথ বেয়ে সামনের এলাকার রাস্তা চলে আসছি। আমার কল্পনা কথাগুলো শেয়ার না করলে আপনারা বুঝতে পারবে না আমার বাইক চালানোর বিষয়টা। এখানো নতুনদের জন্য আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি। আমার কল্পনা কথাগুলো এইবার বলি, পহেলা অক্টোবর ২০২৩ সালে শোরুমে বাইক বুকিংসহ কাগজপত্র কাজ করতে দিয়েছিলাম সেইদিন থেকে আমার এলাকার যত রাস্তাঘাট আমর কল্পনায় ম্যাপ হয়ে গিয়েছিল। আমি জানি না আপনারা হাসবেন কিনা ! সত্যিই কথা বলতে আমার অনেক বেশি কাজে দিয়েছিল সেই মেমেরি (এলাকার রাস্তাঘাট ম্যাপ) ২১ অক্টোবরে পুরোপুরি একা বাইক নিয়ে রাস্তায়। আমার কোনোরকম অসুবিধা বা অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটলে রাস্তার লোক ছাড়া ভিন্ন কোনো পথ ছিলো না। আরও একটা জানি রাখি, নতুন বাইকদের অনেক অনেক কাজে লাগবে আশা করি। শোরুম বলে দিয়েছিল নতুন অবস্থায় সর্বোচ্চ গতি ৩৫ স্পিড বেশি না উঠে, পিছনে বা পিলিয়ন কিংবা দুজনে রাইড আপাতত বন্ধ রাখতে বলছিল। আমি যে কাজগুলো করেছিলাম প্রথম ৫০০ কিলোমিটার মধ্যে এক নম্বর গিয়ারে ১৫-১৭ স্পিড পরে দুই গিয়ারে ২৫-৩৪ কিলোমিটার স্পিড। ২৫-৩০ অক্টোবর মধ্যে সারাদেশে হরতাল অবরোধ কমসূচি সময়ে আমার ভিত্তরে থাকা ধরনের ভয় কেঁটে গিয়েছিল। ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়ে রোড প্রথম পাঁচ মিনিটের জন্য উঠেছিলাম। এরপরে ভয় আসতে কেটে যায় আমার। তবে হাইওয়ে রোডে যেভূল গুলো টুকটাক হয়েছিল।
প্রথমে এলাকার রাস্তার কি কি করেছিলাম। প্রতিদিন সকাল-বিকাল বাইক বের করে ১ নং গিয়ারে ১৫-১৭ কিলোমিটার স্পিড ওঠাতাম (যা এখানো করি) পরে দ্রুত ২ নং গিয়ারে শিফট করে ফেলি। আমার কাছে মনে হয়েছে ২ নং গিয়ারে অনায়াসে ৩২ কিলোমিটার পার স্পিড আবাসিক এলাকায় অথবা রাজধানী যানজট শহুরে মোটামুটি ভালো। সিনিয়ার হয়তোবা ভিন্ন মত থাকতে পারে। আমি যে কাজটি কোনোভাবে ঠিকঠাক করতে পারছিলাম গিয়া শিফট করা, কোনোভাবে মনে রাখতে পারছিলাম না কত নম্বর গিয়ারে রয়েছে বাইকটি। এর জন্য আমার যে সমস্যা গুলো হতো এলাকার রাস্তার গুলো একটু একটু পর পর বিট বা স্পিড প্রতিরোধক বিট ইসমুথলি পার হতে পারতাম না। বেশ জোরে ঝাঁকি লাগতো অথবা বাইক বন্ধ হয়ে যেতো। আমি তখনো জানতাম না যে, গিয়ার শিফট কমিয়ে অথবা সামনে পিছনে ব্রেকধরে গতি কমিয়ে আনলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। স্পিড প্রতিরোধক দেখলে যা করতে হবে ( গিয়ার শিফট কমিয়ে ১ নং নম্বরে নিয়ে আসতে হবে পরে ২ নং গিয়ারে শিফট করতে হবে দ্রুত অথবা সামনে কিংবা পিছনে ব্রেক হালকা করে চাপ দিয়ে গতি কমিয়ে বিট পার হয়ে যাওয়া)।
আমার হাইওয়ে রোডে যখন উঠা শুরু করলাম তখন গাড়ির চাপ কম ছিল আমার জন্য আল্লাহ তরফ থেকে রহমত ছাড়া আমি অন্যকিছু ভাবি না। তারপরেও আমি নতুন বাইক চালক ছিলাম বিধায় আমার অনেক কিছু অজানা ছিল। প্রথম ঘটনা, (ফ্লাইওভার (কলেজ গেট থেকে আব্দুল্লাপুর হয়ে রাজউক কলেজ সামনে পর্যন্ত) আব্দুল্লাপুর পলওয়ে মার্কেট ঠিক আগে আমার সামনে একটি বাস দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছিলো বামপাশে। আমার রাইকের স্পিড ছিল ৩৪-৩৮ মতন আমাকে ডানপাশে দিয়ে বের হতে হবে তক্ষুণি ডানপাশ থেকে আসা একটি প্রাইভেট কার আমার বাইকের সাটারঘাটে বাঁধিয়ে দেয় এবং সাটারঘাট ভেঙ্গে যায়। আমি অবশ্যই প্রাইভেট কারটি দাঁড়ানো চেষ্টা করেনি কারণ আমার ভুল ছিল কিনা চিন্তা করছিলাম। আমার অথবা আমার বাইকের কোনোরকম মারাত্নক ক্ষতি হয়নি বিধায় প্রাইভেট দাঁড় করানো চেষ্টা করেনি। নতুনদের উদ্দেশ্য করে বলছি (হাইওয়ে রোডে বামপাশে কোনো বাসস্টাপিচ অথবা কোনো ছোটো বড়ো গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকলে প্রথমে বাইকটি যত দ্রুত সম্ভব স্পিড লিমিটের মধ্যে আনতে হবে এবং ডানপাশ দিয়ে বের হওয়ার সময় অবশ্যই ইন্ডেকেটার জ্বালিয়ে দেখেশুনে বের হওয়ার চেষ্টা করতে হবে)।
দ্বিতীয় ঘটনা, ১৫০ সিসি অধিকাংশ বাইকের হেডলাইট আলোর পরিমাণ অনেক অনেক কম থাকে। আমার বাইতের হেডলাইট আলো অনেক বেশি কম ছিলো বিধায় উত্তরা থেকে গাজীপুর অভিমুখে যাচ্ছিলাম। ফ্লাইওভার উপরে আলো পরিমাণ থাকার কারণে বিপরীত মুখ থেকে বড় গাড়ির হেডলাইটের আলো আমার চোখে উপরে ছিল বাইকের স্পিড ছিল ৪০ পার কিলোমিটার। আমি কিছু দেখতে না পেয়ে বামপাশ থেকে ডানপাশে সরে যায় এর মধ্যে আমার বাইকের স্ট্যার্ট বন্ধ হয়ে যায়। ভাবুন তো আপনারা হাইওয়ে রোডে সামনে পিছনে অগণিত ছোটো বড়ো গাড়ির সারি। আল্লাহ তায়ালা আমাকে বাঁচিয়ে রাখছে (আলহামদুল্লিলাহ)। রাজধানী অথবা হাইওয়ে রোডে ছেটো-বড়ো গাড়ির হেডলাইটের আলো সরাসরি বাইকারদের হেলমেটের ভিত্তরে দিয়ে চোখে পড়ে বিধায় এতে করে নতুনদের বড়ো ধরনের দূঘটনা ঘটে যেতে পারে। সেই মূহুর্তে যা করণীয় দ্রুত সময়ের মধ্যে বাইকের স্পিড কমিয়ে এনে অতি অল্প সময়ে এন্ট্রিকেটার দিয়ে বামপাশে চলে যাওয়া। যেহেতু হাইওয়ে রোডে বা রাজধানীতে কিংবা বিভাগীয় শহরে বা জেলা শহরে ফগ লাইট ব্যবহার করা বাইকারদের সরকারীভাবে অনুমোদন না থাকার অনেক বেশি সতর্কতার সহিত বাইক রাইড করতে হবে।
সত্যিই কথা বলতে,এলাকার অথবা অপরিচিত এলাকায় বাইকের চলাফেরা আগে রাস্তাঘাট সম্পর্কে আপনার যদি ধারণা থাকে অনেক অনাকাঙ্খিত দূঘটনা হাত রেহাই পেতে পারেন অনেক সহজে। আমার ক্ষেত্রে সবগুলো রাস্তার উঁচু নিচু খানা খন্ড, আবাসিক এলাকায় বিধায় একটু পর পর বিট এইসব এখন পরিচিত বিধায় কোনোরকম ঝামেলা ছাড়াই সহজে রাইড করতে পারছি। মনে রাখতে হবে, সুস্থাবস্থায় দিনশেষে ফেরাটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
এখন আসেন ৩ নং গিয়ার কখন শিফট করবেন। অনেকের ভিন্নমত থাকতে পারে তবে আমার মতে ৩৮-৪২ উঠার সঙ্গে সঙ্গে ৩ নং গিয়ার শিফট করা ভালো। ৪৫-৫০ পার কিলোমিটার স্পিড মধ্যে ৪ নং ও ৫ নং গিয়ার শিফট করবেন। এইবার প্রয়োজন অনুযায়ী স্পিড কমবেশি করে আপনার গন্তব্যস্থলে উদ্দেশ্য যাবেন। অবশ্যই খেয়াল জরুরি আপনি কোন রাস্তায় বাইক চালাচ্ছেন সেটার উপরে অনেক কিছু নির্ভর করে। আপনি হাইওয়ে রোড আর এলাকায় রাস্তায় একমাপে বাইক চালাতে পারবেন না এটা আপনার মনে রাখতে হবে। (আপনার মনে রাখা জরুরি, আপনার সামনের গাড়ির গতি ঘন্টার যদি ৬০ কিলোমিটার হয় আপনাকে অবশ্যই ৫০-৫৫ কিলোমিটার গতি অবশ্যই রাখতে হবে। এটা অবশ্যই করবেন বড়ো গাড়ির পিছনে থাকেন অবশ্যই অবশ্যই গাড়ির ডান অথবা বাম চাকা অনুসরণ করে চালাবেন)। এতে করে সুবিধা রয়েছে। বাইকের স্পিড কমবেশি উঠানামা করার গিয়ার শিফট কত স্পিডে কত গিয়ার কোনো বিধিমালা আমার চোখে পড়েনি। এখানে যাকিছু লিখছি আমি যা করে আসছি নতুন অবস্থায় সেটাই আপনাদের উদ্দেশ্য বিস্তারিত আলোচনায় ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।
আমার বেলায় যে বিষয় গুলো ঘটেছে বাইক বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করবো তেমন কোনো পরিচিত জন বা বন্ধু ছিলনা। আমার অভিজ্ঞতা থেকে যতটুকু পারছি শেয়ার করছি। সামনের লেখাগুলোতে আমি করলাম তা জানাবে আপনাদের। আপনাদের মনে বাইক নিয়ে যেকোনো ধরনের প্রশ্ন যদি থাকে আমাকে করতে পারেন। আমি যথাসম্ভব দ্রুত সময়ে মধ্যে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। বাইক চালানোর নিয়মমাফিক চালাবেন তাহলে অল্পকিছু দিনের মধ্যে বা মোটামুটি কিছুদিন চালালে তখন এটা সম্পর্কে আপনার অটোমেটিকলি একটা ধারণা চলে আসবে। একটা জরুরি কথা, নতুন বাইকাররা খুবই দূঘটনা মধ্যে পতিত হয়, বেশি এক্সপার্ট বাইকাররা সবচেয়ে দূঘর্টনা মধ্যে পড়তে দেখছি।
কাজীআরিফুল ডট কমে নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url