OrdinaryITPostAd

"সুস্থ সহবাস: কতক্ষণ? কতবার? ইসলাম ও নারীর করণীয়"

বিয়ের পর দাম্পত্য জীবনে সহবাস শুধু শারীরিক চাহিদা মেটানোর বিষয় নয়, বরং এটি দম্পতির মানসিক শান্তি, ভালোবাসা এবং পারস্পরিক বোঝাপড়ার অন্যতম মাধ্যম। কিন্তু অনেকেই প্রশ্ন করেন—সহবাস কতক্ষণ হওয়া উচিত? কতবার হলে তা সুস্থ হিসেবে ধরা যায়? আসলে এর কোনো নির্দিষ্ট মিনিট বা সংখ্যার নিয়ম নেই। কারণ প্রতিটি মানুষের শারীরিক সক্ষমতা, মানসিক অবস্থা এবং সম্পর্কের ধরণ ভিন্ন। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, নিয়মিত ও আনন্দদায়ক সহবাস শরীরের জন্য যেমন উপকারী, তেমনি মানসিক চাপ কমাতেও দারুণ ভূমিকা রাখে। অন্যদিকে ইসলাম সহবাসকে শুধু আনন্দের মাধ্যম হিসেবে দেখেনি, বরং এটিকে ইবাদতের অংশ হিসেবেও গণ্য করেছে। হাদীসে এসেছে, স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করা স্বামীর দায়িত্ব, আর স্ত্রীর জন্যও স্বামীর প্রতি দায়িত্বশীল থাকা একটি সওয়াবের কাজ। তবে এখানে অতিরিক্ততা বা অবহেলা—দুটোই নিরুৎসাহিত। ইসলাম সবকিছুতে ভারসাম্য ও পরিমিতির শিক্ষা দিয়েছে।
"Healthy-intercourse-How-long-How-often-Islam-and-what-women-should-do"
নারীর করণীয় নিয়েও স্পষ্ট দিকনির্দেশনা আছে। নারীরও অধিকার রয়েছে শারীরিক ও মানসিক তৃপ্তি পাওয়ার, আর এজন্য স্বামী-স্ত্রীর মাঝে খোলামেলা আলাপ, পরস্পরের প্রয়োজন বোঝা এবং সম্মানজনক আচরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।এই প্রবন্ধে আমরা আলোচনা করব—সহবাসের সঠিক সময়কাল ও বার সংখ্যা নিয়ে বিজ্ঞান কী বলে, ইসলাম কী নির্দেশ দিয়েছে, আর নারীরা কীভাবে সচেতন ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।

যৌন মিলন: সময়কাল, পুনরাবৃত্তি এবং প্রাসঙ্গিক তথ্য

পুরুষের যৌন মিলনের সময়কাল (পেনিট্রেটিভ সেক্স)

  • গড় সময়কাল:গবেষণায় দেখা গেছে, প্রবেশকারী যৌন মিলনের (পুরুষের শিশ্ন দ্বারা যোনিতে প্রবেশ) গড় সময়কাল সাধারণত ৫ থেকে ৭ মিনিট। এটি শুরু থেকে বীর্যপাত পর্যন্ত সময় বোঝায়।
  • বৈচিত্র্য:এই সময় ব্যক্তিভেদে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হতে পারে। কিছু পুরুষের জন্য এটি কয়েক সেকেন্ড হতে পারে, অন্যদের ক্ষেত্রে ১৫ মিনিট বা তারও বেশি স্থায়ী হতে পারে।

প্রভাবকারী কারণ

  • বয়স: বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে সময়কাল সাধারণত হ্রাস পায়।
  • শারীরিক স্বাস্থ্য: উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগের মতো রোগ সময়কালকে প্রভাবিত করতে পারে। ভালো শারীরিক স্বাস্থ্য সাধারণত ভালো কর্মক্ষমতার সাথে সম্পর্কিত।
  • মানসিক স্বাস্থ্য: চাপ, উদ্বেগ, বিষণ্নতা এবং আত্মবিশ্বাসের অভাব সময়কাল কমিয়ে দিতে পারে।
  • যৌন অভিজ্ঞতা: অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির সাথে সাথে নিজের এবং সঙ্গীর শরীর সম্পর্কে জ্ঞান এবং উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণের কৌশলের উন্নতি ঘটে, যা সময়কাল বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
  • উত্তেজনা এবং নিয়ন্ত্রণ: প্রবেশের আগে অতিরিক্ত উত্তেজনা বা মিলনের সময় উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে অক্ষমতা সময়কাল কমিয়ে দিতে পারে।

শীঘ্রপতন এবং দীর্ঘস্থায়ী মিলন

  • শীঘ্রপতন (Premature Ejaculation): যদি মিলন প্রায় সবসময় ১ থেকে ৩ মিনিটের মধ্যে শেষ হয় এবং এর ফলে ব্যক্তি বা দম্পতি অসন্তুষ্ট বা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হন, তবে একে চিকিৎসাবিজ্ঞানে শীঘ্রপতন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি সাধারণ একটি সমস্যা এবং এর কার্যকর চিকিৎসা (ওষুধ, থেরাপি, কৌশল) রয়েছে।
  • দীর্ঘস্থায়ী মিলন (Delayed Ejaculation): যদি মিলন সবসময় ৩০-৪৫ মিনিট বা তারও বেশি সময় ধরে চলে এবং এর ফলে ব্যক্তি বা সঙ্গী ক্লান্ত, বেদনাদায়ক বা অসন্তুষ্ট হন, তবে একে দীর্ঘস্থায়ী বীর্যপাত বলা হয়। এটি তুলনামূলকভাবে কম দেখা যায় এবং চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।
  • "আদর্শ" সময়কাল: কোনো একক "আদর্শ" সময় নেই। যে সময়কালে উভয় সঙ্গীই যৌন তৃপ্তি এবং সন্তুষ্টি অর্জন করেন, তা-ই সেই দম্পতির জন্য উপযুক্ত। গবেষণায় ৭ থেকে ১৩ মিনিটকে অনেক দম্পতির জন্য তৃপ্তিদায়ক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, কিন্তু এটি কঠোর নিয়ম নয়।

এক রাতে বা এক দিনে কতবার মিলন করা যায়?

নির্ভরশীল কারণ এটি কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যা দিয়ে বলা যায় না। এটি নির্ভর করে-
  • বয়স: তরুণ বয়সে সাধারণত পুনরুদ্ধার দ্রুত হয় এবং ক্ষমতা বেশি থাকে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে পুনরুদ্ধারে সময় বেশি লাগে এবং ক্ষমতা কমতে পারে।
  • সামগ্রিক স্বাস্থ্য: ভালো শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য যৌন ক্ষমতা এবং ইচ্ছাকে বাড়িয়ে তোলে। অসুস্থতা বা ক্লান্তি ক্ষমতা কমায়।
  • মানসিক অবস্থা: চাপ, উদ্বেগ, বিষণ্নতা যৌন ইচ্ছা এবং কর্মক্ষমতা কমাতে পারে।
  • অভ্যাস: নিয়মিত যৌন ক্রিয়াকলাপ সাধারণত ক্ষমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  • ওষুধ: কিছু ওষুধ (যেমন অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট, রক্তচাপের ওষুধ) যৌন ক্ষমতা বা ইচ্ছা কমাতে পারে।
  • সঙ্গীর সাথে সম্পর্ক এবং আকর্ষণ: ভালো সম্পর্ক এবং পারস্পরিক আকর্ষণ যৌন ইচ্ছা বাড়ায়।
  • ব্যক্তিগত পছন্দ এবং সন্তুষ্টি: কিছু দম্পতি একাধিকবার পছন্দ করেন, আবার কেউ কেউ একবারেই সন্তুষ্ট থাকেন।

সাধারণ পর্যবেক্ষণ

  • পুরুষ: একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ এক রাতে বা এক দিনে সাধারণত ২-৩ বার মিলন করতে পারে। অনেকে ১ বারেই সন্তুষ্ট থাকেন। কিছু তরুণ বা অত্যন্ত সুস্থ পুরুষের ক্ষেত্রে ৫ বার বা তারও বেশি সম্ভব হতে পারে, তবে এটি ব্যক্তিভেদে অনেক পার্থক্য হয়।
  • নারী: একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক নারী এক রাতে বা এক দিনে সাধারণত ১-৩ বার মিলনে তৃপ্তি পেতে পারেন। এটিও ব্যক্তিভেদে এবং পুনরুদ্ধারের সময়ের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। কয়েকবার মিলনের পরও অনেক নারী তৃপ্তি পেতে পারেন।
  • স্বাস্থ্যের প্রতি লক্ষ্য রাখুন: অতিরিক্ত মিলন লিঙ্গে ব্যথা, যোনিপথের জ্বালা/সংক্রমণ বা শারীরিক-মানসিক ক্লান্তির কারণ হতে পারে। শরীরের সঙ্কেত মেনে চলা এবং বিশ্রাম প্রয়োজনীয়।
  • সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ: নিরাপদ যৌনতা (কনডম ব্যবহার, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা) এবং সঙ্গীর সাথে খোলামেলা যোগাযোগ ও পারস্পরিক সম্মতি যেকোনো মিলনের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

ইসলামিক দৃষ্টিকোণে সপ্তাহে কতবার সহবাস?

  • নির্দিষ্ট সংখ্যা নেই: ইসলামে সপ্তাহে কতবার স্বামী-স্ত্রীর মিলন করা উচিত, তার কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ নেই।
  • মূলনীতি: ইসলাম যৌনতাকে বৈবাহিক বন্ধনকে জোরদার করার, পারস্পরিক ভালোবাসা ও আনন্দ বৃদ্ধির এবং বৈধ সন্তান উৎপাদনের একটি পবিত্র ও প্রয়োজনীয় কাজ হিসেবে দেখে।

গুরুত্বপূর্ণ শর্তাবলী

  • পারস্পরিক সম্মতি: মিলন অবশ্যই উভয় স্বামী ও স্ত্রীর সম্পূর্ণ সম্মতি এবং ইচ্ছার ভিত্তিতে হতে হবে। কারও উপর জোর করা বা চাপ প্রয়োগ করা অত্যন্ত নিন্দনীয়।
  • পারস্পরিক সুখ-শান্তি: মিলনের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত উভয়ের মধ্যে ভালোবাসা বৃদ্ধি করা এবং পারস্পরিক সুখ ও শান্তি নিশ্চিত করা।
  • শারীরিক ও মানসিক অবস্থা: স্বামী-স্ত্রী উভয়ের শারীরিক সুস্থতা, শক্তি এবং মানসিক প্রশান্তি বিবেচনায় নিয়ে মিলনের সংখ্যা নির্ধারণ করা উচিত। অসুস্থতা, চরম ক্লান্তি বা মানসিক অস্থিরতার সময় বিরত থাকা উচিত।
  • ব্যক্তিগত চাহিদা ও সামঞ্জস্য: স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের যৌন চাহিদা, পছন্দ এবং সামঞ্জস্যতা বিবেচনা করতে হবে। একজনের ইচ্ছার বিরুদ্ধে অন্যজনকে বাধ্য করা যাবে না।
  • হাদিসের নির্দেশ: হাদিসে স্ত্রীর সাথে ভালোবাসা ও কোমলতার সাথে ব্যবহার করতে এবং তার যৌন তৃপ্তি নিশ্চিত করতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। (উদাহরণ: সহীহ বুখারী, হাদিস: ৫২০৫; সহীহ মুসলিম, হাদিস: ১৬৪১)।
  • সিদ্ধান্ত: ইসলামে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যৌন মিলনের জন্য কোনো নির্দিষ্ট "কোটা" নেই। এটি একটি ব্যক্তিগত ও গোপনীয় বিষয়, যা উভয়ের পারস্পরিক সম্মতি, শারীরিক-মানসিক সুস্থতা, ব্যক্তিগত চাহিদা এবং পারস্পরিক সুখ-শান্তির ভিত্তিতে নির্ধারিত হওয়া উচিত।

মহিলাদের যৌন মিলন: বয়স এবং সময়কাল

  • শারীরিকভাবে সক্ষম বয়স: শারীরিকভাবে, মেয়েরা সাধারণত বয়ঃসন্ধিকাল (মেনোআর্ক বা প্রথম ঋতুস্রাবের পর) শুরু হওয়ার পর থেকেই গর্ভবতী হওয়ার ক্ষমতা অর্জন করে, অর্থাৎ শারীরিকভাবে তারা যৌন মিলনের জন্য সক্ষম হয়। এই বয়স সাধারণত ১০-১৪ বছরের মধ্যে হয়।
  • আইনি বয়স (বাংলাদেশে): বাংলাদেশে যৌন মিলনের জন্য আইনি সম্মতির বয়স ১৮ বছর। ১৮ বছরের কম বয়সী কোনো মেয়ের সাথে যৌন মিলন আইনত ধর্ষণ বলে গণ্য হয়।
  • মানসিক ও আবেগগত প্রস্তুতি: শারীরিক ক্ষমতা থাকলেও, যৌন মিলনের জন্য একজন মেয়ের মানসিক, আবেগগত এবং সামাজিকভাবে পরিপক্ক হওয়া প্রয়োজন। এর জন্য প্রয়োজন সঠিক জ্ঞান, দায়িত্ববোধ, ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা এবং নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা। এই প্রস্তুতির বয়স ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে এবং শারীরিক সক্ষমতার চেয়ে বেশি বয়সেও হতে পারে।
  • মিলনের সময়কাল: পুরুষের মতো মহিলার মিলনেরও কোনো নির্দিষ্ট সময়কাল নেই। গবেষণায় দেখা গেছে মহিলাদের যৌন উত্তেজনা এবং পৌঁছানোর (অর্গাজম) সময় ব্যক্তিভেদে এবং মিলনের ধরন অনুযায়ী ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয় (কয়েক মিনিট থেকে ৩০ মিনিট বা তারও বেশি)। মহিলার যৌন তৃপ্তি নির্ভর করে উত্তেজনার গুণগত মান, অঙ্গভঙ্গি, আবেগপূর্ণ যোগাযোগ এবং সঙ্গীর মনোযোগের উপর। "শীঘ্রপতন" বা "দীর্ঘস্থায়ী" শব্দগুলো সাধারণত পুরুষের বীর্যপাতের জন্য ব্যবহৃত হয়, মহিলাদের ক্ষেত্রে সরাসরি প্রযোজ্য নয়। যদি কোনো মহিলার যৌন মিলনে অতিরিক্ত ব্যথা বা অসুবিধা হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

যৌন মিলনের সময় নারীর করণীয় (তৃপ্তি এবং সুস্থতার জন্য)

সচেতনতা এবং যোগাযোগ

  • নিজের শরীরকে জানুন: নিজের যৌনাঙ্গ এবং কোন ধরনের স্পর্শ বা ক্রিয়াকলাপ আপনাকে বেশি উত্তেজিত করে বা আরাম দেয়, তা বুঝতে চেষ্টা করুন।
  • খোলামেলা যোগাযোগ: সঙ্গীর সাথে স্পষ্ট এবং সহানুভূতিশীল যোগাযোগ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কী চান, কীভাবে ভালো লাগছে বা লাগছে না, কী পছন্দ করেন বা করেন না, তা স্পষ্টভাবে (কথায় বা ইশারায়) জানান।
  • সঙ্গীর ইচ্ছা জানুন: আপনার সঙ্গীও কী চান বা কীভাবে ভালো লাগে, তা জিজ্ঞাসা করুন এবং মনোযোগ দিয়ে শুনুন।

উত্তেজনাএবং আরাম

  • পর্যাপ্ত ফোরপ্লে: মিলন শুরুর আগে যথেষ্ট সময় নিন উভয়কে পূর্ণ উত্তেজিত করার জন্য। চুম্বন, আলিঙ্গন, স্পর্শ, মর্দন, কথা বলা - সবই ফোরপ্লে-এর অংশ। মহিলাদের জন্য ফোরপ্লে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
  • শিথিলতা: উত্তেজনা বাড়ানোর পাশাপাশি শরীরকে শিথিল রাখার চেষ্টা করুন। গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারেন। উদ্বেগ তৃপ্তি বাধা দেয়।

অংশগ্রহণ এবং অন্বেষণ

  • সক্রিয় সহযোগিতা: নিজেকে নিষ্ক্রিয় ভাববেন না। আপনিও সঙ্গীকে উত্তেজিত করার জন্য সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করুন। তার শরীরের বিভিন্ন অংশে (গলা, বুক, পিঠ, ঊরু, যৌনাঙ্গ) আদর করুন, স্পর্শ করুন।
  • নতুনতার অন্বেষণ: নতুন অঙ্গভঙ্গি, অবস্থান বা কৌশল চেষ্টা করতে ভয় পাবেন না, তবে তা অবশ্যই উভয়ের সম্মতিতে হতে হবে। এতে মনোরমতা বাড়তে পারে।

নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য

  • নিরাপদ যৌনতা: অবাঞ্ছিত গর্ভাবস্থা এবং যৌন সংক্রামিত রোগ (এসটিআই) প্রতিরোধে সর্বদা নিরাপদ যৌনতা অবলম্বন করুন (যেমন কনডম ব্যবহার)।
  • ব্যথা বা অস্বস্তি হলে: যদি মিলনের সময় কোনো ধরনের যোনিপথে ব্যথা, জ্বালা, রক্তপাত বা অস্বস্তি হয়, তবে অবিলম্বে থেমে যান এবং একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ (গাইনোকোলজিস্ট) এর পরামর্শ নিন। এগুলো কোনো সংক্রমণ বা অন্য রোগের লক্ষণ হতে পারে।
  • পরিচ্ছন্নতা: মিলনের আগে এবং পরে যৌনাঙ্গ পরিষ্কার রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

সুস্থ মানুষ কত মিনিট সহবাস করতে পারে?

যেমনটি আগে আলোচনা করা হয়েছে, "সুস্থ" একজন ব্যক্তির জন্যও যৌন মিলনের কোনো একক "আদর্শ" সময়কাল বা সীমা নেই। সময়কাল নির্ভর করে ব্যক্তির বয়স, শারীরিক ও মানসিক অবস্থা, যৌন অভিজ্ঞতা, সঙ্গীর সাথে রসায়ন এবং নির্দিষ্ট মুহূর্তের উত্তেজনার মাত্রার উপর। গবেষণায় প্রাপ্ত গড় সময় (৫-৭ মিনিট) এবং অনেক দম্পতির জন্য তৃপ্তিদায়ক সময়সীমা (৭-১৩ মিনিট) একটি ধারণা দেয়, কিন্তু এটি কঠোর মানদণ্ড নয়। গুরুত্বপূর্ণ হলো যে সময়ে উভয় সঙ্গীই সন্তুষ্ট এবং তৃপ্ত হন। অস্বাভাবিক রকম ছোট (যা শীঘ্রপতনের লক্ষণ হতে পারে) বা অস্বাভাবিক রকম বড় (যা ব্যথা বা ক্লান্তির কারণ হতে পারে) সময়কাল যদি নিয়মিতভাবে দম্পতির জীবনে অসুবিধা সৃষ্টি করে, তবে একজন যৌন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বা ইউরোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

সারমর্ম: যৌন মিলন একটি জটিল এবং অত্যন্ত ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। এর সময়কাল, পুনরাবৃত্তি এবং উপভোগ নির্ভর করে অসংখ্য শারীরিক, মানসিক, আবেগগত এবং আন্তঃব্যক্তিক কারণের উপর। কোনো "স্বাভাবিক" বা "আদর্শ" মানদণ্ড নেই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো পারস্পরিক সম্মতি, খোলামেলা যোগাযোগ, পারস্পরিক সম্মান এবং নিরাপদ যৌনতা। কোনো যৌন সমস্যা (যেমন ব্যথা, শীঘ্রপতন, দীর্ঘস্থায়ী মিলন, ইচ্ছার অভাব) যদি জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটায়, তবে যোগ্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অপরিহার্য।

কল টু এ্যাকশন (Call to Action - CTA)

"আরও জানতে চান? এখনি পড়ুন ‌সুস্থ যৌনজীবনের সম্পূর্ণ গাইড — [বাটন: জানুন আরও]

FAQ (সচরাচর জিজ্ঞাসা)

প্রশ্ন: সাধারণত যৌন মিলন কতক্ষণ স্থায়ী হয়?
উত্তর: গবেষণা অনুযায়ী, পুরুষের গড় সময়কাল ৫-৭ মিনিট। নারীর ক্ষেত্রে উত্তেজনা ও তৃপ্তির সময় ব্যক্তিভেদে আলাদা। তবে ৭-১৩ মিনিট অনেকের কাছে আদর্শ।

প্রশ্ন: এক রাতে কয়বার মিলন করা নিরাপদ?
উত্তর: সুস্থ ব্যক্তি ২-৩ বার করতে পারেন। তবে এটি নির্ভর করে বয়স, স্বাস্থ্য, ক্লান্তি ও দম্পতির ইচ্ছার ওপর। অতিরিক্ত মিলনে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।

প্রশ্ন: ইসলামে সপ্তাহে কতবার সহবাস করা উচিত?
উত্তর: ইসলামে নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা নেই। গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সম্মতি, শারীরিক সুস্থতা ও সুখের ওপর। বেশি মিলনে শারীরিক ক্ষতি হলে তা পরিহার করতে বলা হয়।

প্রশ্ন: মেয়েরা কত বয়সে মিলন করতে পারে?
উত্তর: শারীরিকভাবে সক্ষম হয় বয়ঃসন্ধির পর (প্রায় ১০-১৪ বছর বয়সে)। তবে বাংলাদেশে আইনি সম্মতির বয়স ১৮ বছর। মানসিক পরিপক্বতা, সচেতনতা ও ঝুঁকি বুঝতে পারা জরুরি।

প্রশ্ন: সুস্থ মানুষের জন্য মিলনের 'আদর্শ' সময় কত?
উত্তর: কোনো 'আদর্শ সময়' নেই। সময়কাল ব্যক্তিভেদে ভিন্ন (৩ মিনিট থেকে ৩০+ মিনিট পর্যন্ত)। যে সময়ে উভয়েই তৃপ্ত হন, সেটাই সঠিক। অতিরিক্ত কম বা বেশি সময় সমস্যা হতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

কাজীআরিফুল ডট কমে নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url