OrdinaryITPostAd

৩ দিনে কক্সবাজার ভ্রমণ- বর্ষার রোমাঞ্চকর বাইক ট্রিপের অভিজ্ঞতা

৩ দিনে কক্সবাজার ভ্রমণের বাইক ট্রিপ পরিকল্পনা

ঢাকার শহরের যান্ত্রিক কোলাহল থেকে কিছু দিনের মুক্তি নিতে আমার মন উদগ্রীব ছিল বহুদিন ধরেই। বিশেষ করে বছরের প্রতিটি ঋতুতেই ভ্রমণের আলাদা মজা থাকে – আর আমি ঠিক করলাম ঝুম বৃষ্টিভেজা বর্ষাকালেই এবার বেরিয়ে পড়ব বাংলাদেশের সুদীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের টানে। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের শহর কক্সবাজারের কথা শুনে কে না রোমাঞ্চিত হয়! আমাদের Yamaha Riders Club (YRC) উত্তরা টিমের কয়েকজন বন্ধুও একই মত পোষণ করলো। অবশেষে আমরা সবাই মিলে একটি ৩ দিনের বাইক ট্রিপের পরিকল্পনা করে ফেললাম কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে।যাত্রার দিন ভোর ৫টা বাজতেই উত্তরা গ্রীন মোটরস-এর সামনে একে একে জড়ো হতে থাকলাম আমরা আটজন বাইকার। সবার পরনে YRC-এর বিশেষ ব্লু ও ব্ল্যাক ফুলহাতা টি-শার্ট, মুখে উত্তেজনার ঝলক। বাইকের ইঞ্জিনের ঘরঘর আওয়াজ আর আমাদের মনের ভেতর দুমদাম করতে থাকা হৃদয়ের ধুকপুকানি – এক অদ্ভুত আনন্দ ও রোমাঞ্চে ভরে ছিল মুহূর্তগুলো। বর্ষা মৌসুম বলে আকাশে মেঘের খেলাও চলছে; হালকা ঠান্ডা বাতাস আমাদের স্বাগত জানাচ্ছে। ঠিক সকাল ৬টায় “বিসমিল্লাহ” বলে আমরা রওনা দিলাম কক্সবাজারের পথে, সামনে দীর্ঘ পথ আর অজানা অভিজ্ঞতার হাতছানি।
Bike trip plan to visit Cox's Bazar in 3 days
এই ভ্রমণটাকে আমি শুধু একটি ট্যুর নয়, বরং নিজেকে নতুনভাবে জানার এবং প্রকৃতির সাথে মেলবন্ধনের একটি সুযোগ হিসেবে দেখছিলাম। দীর্ঘ দিনের ব্যস্ততা ও একঘেয়েমি কাটিয়ে উঠতে বন্ধুরা মিলে এমন একটি অভিযানে বের হওয়ার উত্তেজনা ভাষায় বোঝানো মুশকিল। পথেই কি অপেক্ষা করছে জানি না, কিন্তু আমরা প্রস্তুত – বৃষ্টির ছাট হোক বা রোদের তেজ, সমুদ্রের ডাক আমাদের টানছে। চলুন, আমার সাথে কথোপকথনের ঢঙেই শেয়ার করি আমাদের এই তিন দিনের রোমাঞ্চকর সফরের প্রতিটি খুঁটিনাটি, আনন্দ-বেদনা আর অভিজ্ঞতার গল্প।

প্রথম দিন: ঢাকা থেকে কক্সবাজার – দীর্ঘ পথের রোমাঞ্চ

প্রথম দিনের শুরুটাই ছিল এক কথায় দারুণ। রাজধানী ঢাকায় তখনও সূর্য উঁকি দেয়নি ঠিকমতো, তার আগেই আমরা ব্যস্ত শহর পেরিয়ে হানিফ ফ্লাইওভারের দিকে ছুটছি। সকালের ঠান্ডা হাওয়া গায়ে মেখে বাইক চালানোর মজাই আলাদা – মনে হচ্ছিল যেন আমরা স্বাধীন পাখি, ইচ্ছেমতো ডানা মেলে উড়ছি খোলা আকাশের নিচে। কিছুক্ষণের মধ্যেই শহরের কোলাহল পেছনে ফেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আমরা হাওয়ার সাথে পাল্লা দিয়ে ছুটতে শুরু করি।দাওয়াত পাওয়া সকালের সূর্যের আলো আমাদের পথ দেখাচ্ছিল। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পরে কুমিল্লার কাছে পৌঁছে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম একটু বিরতি নেওয়ার। পেটপূজা ছাড়া এত লম্বা জার্নি কীভাবে হয়! কাছের এক হোটেলে গরম গরম পরোটা, ডালভাজি আর চা দিয়ে সকালের নাস্তা সেরে নিলাম। কুমিল্লার প্রসিদ্ধ রসমলাই চোখ এড়ায় কীভাবে – ফিরতে সময় নষ্ট করিনি সেটা চেখে দেখতে! নাস্তার টেবিলে আমাদের আলোচনায় শুধু আগামীর পরিকল্পনাই নয়, রাস্তায় সতর্কতা ও বাইক চালানোর বিভিন্ন কৌশলও স্থান পেল। বর্ষার রাস্তা, সুতরাং সবাইকে হেলমেট, রেইনকোট ও গ্লাভস নিশ্চিতভাবে পরার পরামর্শ দিয়ে নিলাম আবার।

নাস্তার পর নতুন উদ্যমে আবার পথচলা শুরু। চারপাশের গ্রামের সবুজ মাঠ, মেঘে ঢাকা আকাশ, মাঝেমধ্যে টিপটিপ বৃষ্টি – সব মিলিয়ে এক অপূর্ব পরিবেশ। আমরা হাইওয়েতে লাইন ধরে বাইক চালিয়ে যাচ্ছি, পথের মোড়ে মোড়ে স্থানীয় মানুষজন আমাদের দেখে হাত নাড়িয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে, যেন আমরাও তাদের এই সকালটা রাঙিয়ে দিয়েছি। আধুনিক এক্সপ্রেসওয়ে আর মসৃণ মহাসড়কের কারণে গতি ভালোই পাচ্ছিলাম, তবে নিরাপত্তাই সবার আগে – তাই ট্রাফিক নিয়ম মেনে ও গতিসীমার মধ্যেই চলেছি।বেলা বাড়ার সাথে সাথে চট্টগ্রাম শহরের কাছাকাছি চলে এলাম। বন্দরনগরীর আশেপাশে একটু জ্যাম আর কোলাহল বাড়লেও আমাদের উত্তেজনা কমেনি। চট্টগ্রাম বাইপাস দিয়ে শহরের ভিড় এড়িয়ে দুপুরের দিকে মিরসরাই-এর কাছে একটি স্থানীয় হোটেলে আমরা দুপুরের খাবারের বিরতি নিলাম। ভাত, গরম ভুনা গরুর মাংস আর সবজি – আহা, ক্লান্ত শরীরে এ যেন স্বর্গীয় শক্তি দিল! খাওয়াদাওয়া শেষ করে একটু স্ট্রেচিং করে আবার রওনা দিলাম কক্সবাজারের পথে।

চট্টগ্রাম পেরিয়ে মহাসড়কের দু’পাশে তখন পাহাড় আর সমতলের মিশ্র এক নৈসর্গিক দৃশ্য। পথে দেখতে পেলাম বাকলিয়া চর আর চকরিয়ার সবুজ প্রকৃতি, মাঝে মাঝে পথকে আলিঙ্গন করে থাকা ছোট ছোট নদী-খাল। বিকেলের দিকে আকাশের গম্ভীর ভাব একটু বেড়েছে, দূরে কালো মেঘ জমেছে দেখে আমরা একটু গতি বাড়ালাম যেন বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগেই গন্তব্যে পৌঁছাতে পারি। প্রায় ৫টার দিকে অবশেষে কক্সবাজার শহরের সীমানায় প্রবেশ করলাম। দীর্ঘ ১০-১১ ঘণ্টার যাত্রার পর বাইক থেকে নামতেই পা দু’টো যেন অবশ হয়ে আসছিল, কিন্তু মনের উত্তেজনায় সেসব টের পাচ্ছিলাম না।কক্সবাজার পৌঁছে আগে থেকে বুকিং করে রাখা হোটেলে চেক-ইন করলাম। হোটেলটি কলাতলী সৈকতের কাছেই, মাঝারি মানের হলেও বেশ পরিষ্কার ও আরামদায়ক, আর গ্যারেজে আমাদের বাইকগুলো রাখার ব্যবস্থাও ছিল। ফ্রেশ হয়ে দ্রুত কাপড় বদলে নিলাম, কারণ সূর্যাস্তের আগে সমুদ্র দেখতে যাওয়ার লোভ সামলাতে পারছিলাম না। বিকেল তখন শেষের পথে, আমরা দৌড়ে গেলাম লাবণী পয়েন্টের দিকে – এটাই কক্সবাজারের সবচেয়ে জনপ্রিয় সৈকত পয়েন্ট।

সৈকতে পা দিতেই সমুদ্রের বিশালতার সামনে দাঁড়িয়ে সত্যিই মনটা অভিভূত হয়ে গেল। প্রবল ঢেউয়ের গর্জন আর সুনসান আকাশ – বর্ষার মৌসুমে সমুদ্রের রূপ সত্যিই অন্যরকম। সূর্যাস্তের মায়াবী আলো মেঘের আড়াল থেকে ঝিলিক দিচ্ছিল পানির উপর, অদ্ভুত সুন্দর সে দৃশ্য। সকালের সমস্ত ক্লান্তি নিমিষেই উধাও হয়ে গেল ঠান্ডা সমুদ্রবায়ু গায়ে লাগতেই। আমরা বন্ধুরা একসঙ্গে সৈকতের বালিতে বসে পড়লাম, কেউ ছবি তুলতে ব্যস্ত, কেউবা নীরবে সমুদ্রের সৌন্দর্য গিলে খাচ্ছে চোখ ভরে। জীবনের ছোট ছোট টেনশনগুলোও যেন ঢেউয়ের সাথে ভেসে যাচ্ছিল তখন।রাত বাড়ার সাথে সাথে পেটে আবার ক্ষুধা অনুভব করলাম। স্থানীয় এক রেস্তোরাঁ থেকে গরম গরম খিচুড়ি আর মচমচে ভাজা সামুদ্রিক মাছ কিনে নিয়ে আসলাম সৈকতেই। সমুদ্রের সামনে বসে রান্নার সুগন্ধ আর খাদ্যের স্বাদ যেন দশগুণ বেড়ে গেল সবার কাছে। গল্প, হাসি আর সমুদ্রের গর্জন – এ এক অনন্য অভিজ্ঞতা ছিল আমাদের সবার জন্য। সেই রাতের আকাশে মেঘ থাকায় তারা দেখতে পাইনি, কিন্তু সমুদ্র আর আড্ডায় বিন্দুমাত্র খামতি ছিল না। প্রায় রাত ১০টার দিকে হোটেলে ফিরলাম। দীর্ঘ জার্নির ধকল টের পাচ্ছিলাম শরীরে, তাই শুয়ে পড়তে দেরি করলাম না। শেষবার বারান্দা থেকে সমুদ্রের অন্ধকার অবয়বটাকে দেখে মনে মনে বললাম – ধন্যবাদ, এতদিনে আসতে পেরেছি তোমার কাছে।

দ্বিতীয় দিন: নতুন আবিষ্কার – সমুদ্র, পাহাড় আর বন্ধুত্ব

কক্সবাজারে দ্বিতীয় দিনটা ছিল পুরোপুরি ঘোরাঘুরি আর অ্যাডভেঞ্চারের জন্য বরাদ্দ। ভোরে ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই ব্যালকনিতে গিয়ে সমুদ্রের দিকে তাকালাম; মেঘলা আকাশের নিচে নীল জলরাশির যে অংশটা দেখা যাচ্ছিল, তা দেখেই মন প্রাণ জুড়িয়ে গেল। আজকের পরিকল্পনা হলো মেরিন ড্রাইভ রোড ধরে হিমছড়ি ও ইনানী পর্যন্ত বাইক চালিয়ে দেখা এবং আশপাশের দর্শনীয় জায়গাগুলো ঘোরা।সকালের নাস্তা সেরে হেলমেট পরে আমরা শুরু করলাম দক্ষিণমুখী যাত্রা। শহর পেরিয়ে মেরিন ড্রাইভ রোডে উঠতেই চারপাশের নৈসর্গিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। একদিকে সুবিশাল নীল সমুদ্র, অন্যদিকে সবুজে ঢাকা পাহাড় – মাঝখানে চকচকে পিচঢালা পথটা একেবারে ছবির মতন লাগছিল। মাঝে মাঝেই হালকা বৃষ্টি এসে আমাদের ভিজিয়ে দিচ্ছিল, তবে সেটা উপভোগ করতেই তো আমরা বেরিয়েছি! সতর্কতার সাথে ধীরে চালিয়ে সাগরপারের এই অপূর্ব রাস্তা উপভোগ করছিলাম প্রতিটি ক্ষণে।

প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হিমছড়ি জাতীয় উদ্যানের কাছে আমরা থামলাম। হিমছড়ির আসল আকর্ষণ হলো সেখানে পাহাড় বেয়ে উপরে ওঠার একটি পথ এবং একটি ছোট কিন্তু চমৎকার ঝর্ণা, যেটা বর্ষার কারণে বেশ জাঁকিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বাইক পার্ক করে টিকিট কেটে উপরের ভিউ পয়েন্টে উঠলাম আমরা হাঁটতে হাঁটতে। বেশ কিছু সিঁড়ি ভাঙার পর উপরে পৌঁছে যে দৃশ্য পেলাম, তা সত্যিই স্মরণীয় হয়ে থাকবে চিরকাল। একদিকে সবুজ পাহাড়ের সারি, নিচে নীল সমুদ্র আর ঢেউয়ের গর্জন – প্রকৃতির এমন সৌন্দর্য দেখে আমাদের সবার ক্লান্তি উধাও হয়ে গেল। বন্ধুরা মিলে বেশ কিছুক্ষণ সেই উঁচু পয়েন্টে দাঁড়িয়ে বাতাস আর চারপাশের রূপ উপভোগ করলাম, কয়েকটা গ্রুপ ছবি তুললাম YRC দলের পতাকা হাতে।এরপর নিচে নেমে এসে ঝর্ণার ঠান্ডা জলধারায় হাত-মুখ ধুয়ে সতেজ হলাম। বৃষ্টি আর ঝর্ণার মিলিত ধারা পাথরের গা বেয়ে নেমে যাচ্ছে, প্রকৃতিকে ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করছিল খুব। সময়ের অভাবে ঝর্ণায় নেমে স্নান করা হলো না যদিও, তবু পাশে দাঁড়িয়ে সেই শীতল পানির স্পর্শ মনভরে অনুভব করলাম।

পুনরায় আমরা বাইকে উঠে রওনা দিলাম ইনানীর দিকে। হিমছড়ি থেকে ইনানী সৈকত আর বেশি দূর নয়। এই পথের সৌন্দর্য যেন আরও বেড়ে গেল – রাস্তার একদিকে সাগর আর অন্যদিকে সবুজ টিলার অসাধারণ মিশেল চলতেই থাকলো। ইনানী সমুদ্র সৈকতে পৌঁছে দেখি পর্যটকের ভিড় খুব বেশি নেই, হয়তো বর্ষাকাল এবং পিক সিজন না হওয়ার কারণেই। আমাদের জন্য এটা বরং ভালোই হয়েছে – নিরিবিলি পরিবেশে প্রকৃতিকে অনুভব করা যায় আরো গভীরভাবে। ইনানী সৈকতের বিখ্যাত পাথরগুলোর কাছে গিয়ে দেখলাম, জোয়ার না থাকায় অনেকগুলো পাথর জেগে আছে জলের উপর। সে এক বিশাল পাথরের বিছানা, তার ফাঁকে ফাঁকে সমুদ্রের ঢেউ এসে জল দিয়ে যাচ্ছে। আমরা জুতো খুলে স্বচ্ছ পানিতে নেমে পড়লাম – ছোট ছোট মাছ পায়ের কাছ দিয়ে সাঁতার কাটছে, একদম পরিষ্কার জলে নিজের মুখ দেখতে পাচ্ছিলাম! বন্ধুরা কেউ ছবির পোজ দিচ্ছে, কেউ পাথরের উপর বসে সাগরের দিকে মগ্ন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। এক ফাঁকে আমি নিজের জন্য একটু সময় নিলাম – এত দূর এসে প্রকৃতির মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলার এই তো সুযোগ। চোখ বন্ধ করে গভীর শ্বাস নিতেই মনে হলো, ঢাকার যানজট আর অফিসের চাপ থেকে কত দূরে চলে এসেছি, কী শান্তি এখানে! 

দুপুর নাগাদ পেট থেকে আওয়াজ আসায় আবার বাস্তবে ফিরে এলাম। ইনানী থেকে একটু দূরে, রাস্তার পাশের একটি ছোট্ট খাবারের দোকানে সাদাসিধে ভাত-মাছ আর সবজি দিয়ে দুপুরের খাবার সেরে নিলাম। ঝুপড়ি ঘরের এই সাধারণ খাবারের মধ্যেও যেন লুকিয়ে ছিল অসাধারণ স্বাদ – হয়তো ক্ষুধা, হয়তো পরিবেশ, নাকি বন্ধুদের সঙ্গ, কে জানে!খাওয়ার পর একটু জিরিয়ে নিয়ে ভাবলাম এত কাছে এসে রামু দেখবো না? রামু কক্সবাজার থেকে ভেতরের দিকে একটি উপজেলা, বৌদ্ধ মন্দিরগুলো আর প্রায় ১০০ ফুট লম্বা বুদ্ধ মূর্তির জন্য বিখ্যাত। বন্ধুরাও রাজি হয়ে গেল ছোট্ট এই বাড়তি অ্যাডভেঞ্চারে। ইনানী থেকে ফিরে কক্সবাজার শহর ছাড়িয়ে উত্তরের পথে খানিকটা গিয়ে রামুর দিকে বাইক নিয়ে ছুটলাম। পথটা সরু এবং বর্ষার জন্য কিছু কাদা ছিল, তাই খুব ধীরে আর সতর্কতার সাথে চালাতে হয়েছে। বিকেল বেলায় রামুর বনভন্তের মন্দির আর সেই বিশাল বুদ্ধ মূর্তি দেখে আমরা অভিভূত হলাম – এত শান্তির পরিবেশ, যেন এক টুকরো থাইল্যান্ড বা মিয়ানমার আমাদের দেশের মাঝেই। সেখানে স্থানীয় ভান্তে (ভিক্ষু) এর সাথে কুশল বিনিময় করলাম; তিনি আমাদের আশীর্বাদও দিলেন যেন শান্তিতে যাত্রা সম্পন্ন করতে পারি।রামুতে আরও কিছু প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার ঘুরে দেখে সূর্য নামার আগেই কক্সবাজার ফিরতে চেয়েছিলাম আমরা। তবে মেঘে ঢাকা আকাশে আজ সূর্যাস্ত দেখা হলো না। সন্ধ্যার ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতেই শহরে পৌঁছে গেলাম। হোটেলে ফেরার আগে বাইকগুলো ভালো করে মুছে শুকনো করলাম – সারাদিন কাদা-মাটি-জল কম লাগেনি গাড়িতে। নিজেরাও গরম পানির নিচে একটু ঝরঝরে হয়ে নিলাম হোটেলে ফিরে।

সন্ধ্যায় শহরে বের হলাম কিছু কেনাকাটা করতে। কক্সবাজার এলে বার্মিজ মার্কেটে না গেলেই নয়! সেখানে বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী বার্মিজ পণ্য, মুখরোচক আচার, শুকনা মাছ, হাতের কাজের জিনিসসহ কত কিছু যে পেয়ে গেলাম। আমার ব্যাগ ভরে গেল পরিবার আর পরিচিতদের জন্য সামান্য কিছু উপহার কিনতেই।রাতের খাবারের জন্য আমরা বেছে নিলাম কক্সবাজারের বিখ্যাত “পৌষী” রেস্তোরাঁ। এখানে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানি গরুর মাংস, সমুদ্রের টাটকা মাছ দিয়ে তৈরি তরকারি, আর শেষে মিষ্টান্ন দিয়ে পেটপুরে ভোজন সেরে নিলাম। টেবিলে সারাদিনের ঘটনা নিয়ে হাসাহাসি আর আলোচনা চলতেই থাকলো – কার বাইক আজ পানিতে পিছলে যাচ্ছিল, কে বৃষ্টিতে ভিজে কেমন লাগছিল, এমন সব গল্পে জমে উঠলো আড্ডা।দিনের শেষে সৈকতের ধার দিয়ে হেঁটে হোটেলে ফিরলাম। সমুদ্রের দূরের গর্জন আর ঠান্ডা বাতাসে মনটা কেমন আবেগাপ্লুত হয়ে উঠছিল। আমাদের দলের একজন হঠাৎ বলে উঠলো, “ইয়ার, জীবনটা আসলেই এডভেঞ্চার না? আজ যদি না আসতাম তাহলে কত কিছু যে মিস করতাম!” — বাকিরাও মনে মনে সায় দিলাম কথাটায়। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মনে হচ্ছিল, এই দিনটা কেন এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল!

তৃতীয় দিন: বিদায়ের আগে আরও কিছু স্মৃতি

বাইক ট্রিপের তৃতীয় দিন মানে ফিরে যাওয়ার পালা। মনটা সকাল থেকেই একটু খারাপ লাগছিল – অপূর্ব এই জায়গা, সমুদ্রের নীল জলরাশি আর সবুজ পাহাড় ছেড়ে আবার কর্মব্যস্ত জীবনে ফিরতে হবে। তবুও প্রতিটি যাত্রার শেষ তো আছেই, আর এই শেষ থেকেই তো নতুন শুরুর বীজ জন্মায়।সকালে প্রাতঃরাশ সেরে আজ আর দূরে কোথাও যাওয়ার পরিকল্পনা নেই, বরং কক্সবাজার শহরেই শেষ মুহূর্তের কিছু স্মৃতি সংগ্রহের ইচ্ছে। হোটেল থেকে আগেই চেক-আউট করে লবিতে ব্যাগ গুছিয়ে রাখলাম। তারপর চলে গেলাম কাছের সৈকতে, শেষবারের মতো ঢেউয়ের সাথে বিদায় জানাতে। সকালে সাগরের রং একটু ভিন্ন – ধূসর আকাশের নিচে মেলে থাকা সবুজাভ নীল জলরাশি এক অনন্য আবহ তৈরি করেছে। আমরা কয়েক মিনিট নীরবে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্য দেখতে থাকলাম, যেন মনের মধ্যে স্থায়ীভাবে ছবিটা তুলে নিতে চাইছি।এরপর শহরের প্রসিদ্ধ শপিং স্পটগুলোতে গেলাম। কক্সবাজারের স্মারক হিসেবে শামুক-ঝিনুকের তৈরি কিছু শৌখিন জিনিস, দেয়ালে টাঙানো শোপিস ইত্যাদি কিনলাম। সঙ্গীদের কেউ কেউ শুকনা মাছ আর বার্মিজ আচার কিনতে ব্যস্ত, তো কেউ লুঙ্গি-গামছা নেওয়ার জন্য দরদাম করছে। আমিও একটু দাঁড়িয়ে ওদের এই কেনাকাটা উপভোগ করছিলাম – সত্যি, ভ্রমণ শেষে ছোট ছোট স্মারক নিয়ে ফিরতে সবাই ভালোবাসি, যা দেখলেই বাড়ি গিয়ে মনে পড়বে এই সফরের কথা। 

বেলা ১২টার মধ্যেই আমরা রওনা দেওয়ার প্রস্তুতি নিলাম। শেষবারের মতো হোটেলের বারান্দা থেকে সমুদ্র আর আকাশটা এক নজর দেখে নিলাম, মনে হলো চোখেই সেই সৌন্দর্য মেখে নিলাম যেন। বাইকের ইঞ্জিন স্টার্ট দেওয়ার সময় এক অদ্ভুত মিশ্র অনুভূতি কাজ করছিল – একদিকে বাড়ি ফেরার তাড়না, অন্যদিকে এখান থেকে বিচ্ছেদের বেদনা। আমাদের গ্রুপ লিডার সবার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করলো, “সবাই রেডি?” আমরা হেলমেটের ভিজরের আড়াল থেকে চোখে চোখ মিলিয়ে ইশারা দিলাম – হ্যাঁ, আমরা প্রস্তুত।ফেরার পথটা একই হলেও অভিজ্ঞতাটা ছিল ভিন্ন রকমের। বের হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই আকাশটা অঝোরে কেঁদে উঠলো – মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হল। মহাসড়কে তখন আমাদের গতি একদম কম, হেডলাইট জ্বালিয়ে সতর্কতার সাথে এগোচ্ছি। শরীর ভিজে একাকার, কিন্তু মনের ভেতর কেমন একটা স্বস্তি – হয়তো এই বৃষ্টিই আমাদের ট্রিপের শেষ উপহার। এমনিতেও বর্ষার সৌন্দর্য আমরা মিস করতে চাইনি।কুমিল্লার কাছাকাছি এসে বৃষ্টি একটু থামলো। আমরা থেমে গরম চা আর কিছু নাস্তা নিয়ে জিরিয়ে নিলাম। সবাই ভেজা জামাকাপড় বদলে শুকনা টি-শার্ট পরে নিল, ভাগ্যক্রমে ব্যাগে বাড়তি কাপড় ছিল। তারপর আবার বাকিটা পথ পাড়ি দেওয়া শুরু করলাম।

রাত ৯টার দিকে ঢাকার সীমানায় পৌঁছলাম। শহরের আলোর ঝলকানি, হর্নের শব্দ, জ্যাম – সবকিছু আবার চেনা বাস্তবে ফেরার বার্তা দিচ্ছিল। উত্তরায় যেখান থেকে যাত্রা শুরু করেছিলাম, ঠিক সেখানেই দুর্দান্ত এই সফরটার সমাপ্তি করলাম। একে অপরকে জড়িয়ে ধরলাম বিদায়ের আগে। তিন দিনে যে বন্ধুত্বের বন্ধন আরও মজবুত হয়েছে, সেই অনুভূতিটা চোখে-মুখে স্পষ্ট ছিল সবার। কেউ ক্লান্ত শরীর নিয়ে বাড়ির পথে চলল, কেউবা আবার কাজের তাড়া মনে করে সাথে সাথেই বাইক ঘুরিয়ে বেরিয়ে গেল – জীবনের চাকা যে কারও জন্য থেমে থাকে না।হেলমেট খুলে আকাশের দিকে তাকালাম। বৃষ্টিতে ধোয়া পরিষ্কার আকাশে কয়েকটা তারা চোখ মিটমিট করছিল। মনে হলো তারা আমাদের ফিরিয়ে স্বাগত জানাচ্ছে। আমার মন তখন কৃতজ্ঞতায় ভরা – নিরাপদে পুরো ট্রিপটা শেষ করতে পেরেছি, কত স্মৃতি নিয়ে ফিরছি। নিজের মনে নিজেই বললাম, “নিজে জানলাম, এবারে এই অভিজ্ঞতা অন্যকে জানাব।” এই ভ্রমণকাহিনী তাই লিখছি, যাতে আমার মতো আরও কেউ অনুপ্রাণিত হয়ে জীবনের ব্যস্ততা থেকে সময় বের করে এমন রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিতে পারেন।

শেষকথা

তিন দিনের এই কক্সবাজার বাইক ভ্রমণটা আমার জীবনে এক বিশেষ অধ্যায় হয়ে রইলো। দৈনন্দিন যান্ত্রিক জীবনে আমরা অনেক সময়ই ভুলে যাই প্রকৃতির সান্নিধ্য আর বন্ধুত্বের সত্যিকারের মূল্য। এই সফরে সমুদ্রের বিশালতা আমাকে বিনয়ী হতে শিখিয়েছে, পাহাড়ের স্থিরতা শিখিয়েছে ধৈর্য রাখতে, আর পথের প্রতিটি বাঁক শিখিয়েছে যে জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করতে জানতে হয়। বন্ধুরা মিলে পথ ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে যে সহযোগিতা আর আনন্দ, তা আমাদের সম্পর্ককে আরও গভীর করেছে।বর্ষার সময় ভ্রমণে বের হয়ে দেখলাম, প্রকৃতির রূপের অন্য এক দিক আছে যা শীতের রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে পাই না। বৃষ্টিতে ভেজা সবুজ বনানী, মেঘে ঢাকা আকাশ আর উত্তাল সমুদ্র – কক্সবাজারের এই রূপ আমার হৃদয়ে আলাদা ছাপ রেখে গেছে। অনেকেই ভাবেন বর্ষায় ভ্রমণ সুবিধাজনক নয়, কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা বলছে ভিন্ন কথা। বর্ষায় রাস্তাঘাটে একটু কাদা থাকতে পারে, সমুদ্রে নামা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, কিন্তু আপনি যদি প্রস্তুত থাকেন আর নিরাপত্তা মেনে চলেন, তাহলে এই মৌসুমে ভ্রমণের আনন্দ আলাদা। উপরন্তু, অফ-সিজন হওয়ায় কক্সবাজারে তখন ভিড় কম থাকে, হোটেল ভাড়াতেও ছাড় মেলে – পকেটের পক্ষেও সুবিধাজনক। এই যাত্রা থেকে আমি শিখেছি যে জীবন এক ধরণের বই, আর ভ্রমণ তার পৃষ্ঠাগুলো উল্টে দেওয়ার এক অসাধারণ উপায়। আমরা যে স্মৃতিগুলো সংগ্রহ করেছি, সেগুলো সারা জীবনের সম্পদ হয়ে থাকবে। প্রত্যেক সূর্যাস্তে আমরা নতুন করে ভাবতে শিখেছি কাল আবার কী দেখা হবে, আর প্রত্যেক ভোরে নতুন রুটে বের হওয়ার আগে মনে হয়েছে, জীবনে অ্যাডভেঞ্চার খুঁজে নিতে হয় নিজেকেই।

শেষমেশ, ভ্রমণ মানে শুধু স্থান পরিবর্তন নয়, নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কারও। কক্সবাজারের এই সফর আমার কাছে তাই “নিজেকে জানার” একটা চমৎকার সুযোগ ছিল, এবং এখন এই গল্পটুকু লেখার মাধ্যমে “অন্যকে জানানোর” চেষ্টা করছি। আশা করি আমার এই অভিজ্ঞতা পড়ে আপনারও মন কেঁদে উঠবে বেরিয়ে পড়তে – হয়তো বাইক নিয়ে, হয়তো পরিবারের সাথে গাড়িতে, কিংবা বন্ধুবান্ধব নিয়ে বাসে করে। গন্তব্য যাই হোক, পথটাই আসল উপভোগেরভ্রমণ শেষে এখন মনে হচ্ছে, তিন দিনে ঘটে যাওয়া প্রতিটি মুহূর্তই এক একটি গল্প – যা সারাজীবন মনে থাকবে। প্রত্যেকেরই জীবনে নিত্যদিনের গণ্ডির বাইরে এমন কিছু অভিজ্ঞতা দরকার, যা নতুন দিগন্তের দরজা খুলে দেয়। আমার কক্সবাজার ট্রিপ ঠিক তেমনই এক অধ্যায় হয়ে রইল।

Call to Action: যদি এই ভ্রমণকাহিনী আপনার মনে একটু হলেও দাগ কেটে থাকে, তবে আজই নিজের জন্য একটি ছোট্ট সফরের পরিকল্পনা করুন। জীবন ও প্রকৃতির এত রূপ-রং আপনার জন্য অপেক্ষা করছে! আমাদের এই ব্লগের সাথেই থাকুন – আপনার নিজের অভিজ্ঞতা বা প্রশ্ন মন্তব্যে জানান। নতুন নতুন ভ্রমণ গল্প ও তথ্য পেতে সাবস্ক্রাইব করতে ভুলবেন না। চলুন, নিজে জানুন এবং অন্যকে জানান – একসাথে পৃথিবীটা আরেকটু বেশি আবিষ্কার করি।

FAQ

প্রশ্ন: কক্সবাজার ভ্রমণের জন্য সেরা সময় কোনটি?
  • উত্তর: শীতকালে কক্সবাজারে ভিড় সবচেয়ে বেশি হয়, তাই অনেকেই শীতকেই বেছে নেন। তবে বর্ষা ও অন্যান্য ঋতুতেও কক্সবাজারের সৌন্দর্য ভিন্ন রূপে ধরা দেয়। অফ-সিজনে (যেমন বর্ষা বা বসন্তে) ভিড় কম থাকায় নিশ্চিন্তে উপভোগ করতে পারবেন এবং হোটেল ভাড়াতেও ছাড় পাবেন।

প্রশ্ন: বর্ষাকালে বাইক নিয়ে দীর্ঘ সফর কতটা নিরাপদ?
  • উত্তর: বর্ষায় রাস্তা কিছুটা পিচ্ছিল ও কাদাময় হতে পারে, তাই বাড়তি সতর্কতা দরকার। ভালো মানের টায়ার আছে কিনা ও ব্রেক ঠিক আছে কিনা আগে চেক করে নিন। রেইনকোট, সুরক্ষিত হেলমেট ও গিয়ার পরুন। বৃষ্টিতে দৃশ্যমানতা কমে যায়, তাই হেডলাইট জ্বালিয়ে রাখুন এবং গতি কমিয়ে চালান। নিরাপত্তা মেনে চললে বর্ষায়ও বাইক ট্রিপ উপভোগ্য ও নিরাপদ হতে পারে।

প্রশ্ন: ৩ দিনের এই ট্রিপে মোট খরচ কেমন হয়?
  • উত্তর: খরচ অনেকটাই আপনার ভ্রমণ স্টাইলের ওপর নির্ভর করে। আমরা মাঝারি মানের হোটেলে ছিলাম এবং স্থানীয় রেস্টুরেন্টে খেয়েছি, এতে জনপ্রতি আনুমানিক ৫,০০০-৬,০০০ টাকা লেগেছে (ঢাকা থেকে বাইকে যাওয়ায় অতিরিক্ত যানবাহন ভাড়া লাগেনি, শুধু জ্বালানির খরচ ভাগ হয়ে গেছে)। আপনি যদি বিলাসবহুল হোটেল বা বিমানে যান, খরচ বাড়বে। আবার বাজেট ট্রাভেলার হলে কমেও যেতে পারে।

প্রশ্ন: পরিবার নিয়ে বা গাড়িতে করে এই একই প্ল্যান অনুসরণ করা যাবে?
  • উত্তর: অবশ্যই পারবেন। আমাদের সফরটি বাইককেন্দ্রিক ছিল ঠিকই, কিন্তু কক্সবাজারের মূল দর্শনীয় জায়গাগুলো সবার জন্যই উপভোগ্য। আপনি পরিবার নিয়ে প্রাইভেট গাড়ি বা মাইক্রোবাসে গিয়েও একই ৩ দিনের পরিকল্পনা অনুসরণ করতে পারেন। শুধু যাত্রার সময়সূচী একটু নমনীয় রাখবেন এবং পথিমধ্যে বাচ্চা বা বয়স্ক কেউ থাকলে তাদের আরাম নিশ্চিত করতে মাঝেমধ্যে বাড়তি বিরতি নেবেন।

প্রশ্ন: কক্সবাজারে কোন কোন স্থান অবশ্যই দেখার মতো?
  • উত্তর: কক্সবাজারের মূল আকর্ষণ ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত, যার লাবণী, কলাতলী, সুগন্ধা ইত্যাদি পয়েন্টগুলো অত্যন্ত জনপ্রিয়। এছাড়া মেরিন ড্রাইভ ধরে হিমছড়ি ও ইনানী সৈকত দেখতে পারেন, যেখানে পাহাড় ও সাগরের অপূর্ব মিলন উপভোগ করবেন। সময় থাকলে রামুর বৌদ্ধ মন্দিরগুলি ও ১০০ ফুট লম্বা বুদ্ধ মূর্তিটা দেখে আসতে পারেন। আর শহরে বার্মিজ মার্কেটে কেনাকাটা এবং স্থানীয় রেস্তোরাঁয় মেজবানি গোশত বা সি-ফুড চেখে দেখতে ভুলবেন না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

কাজীআরিফুল ডট কমে নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url