OrdinaryITPostAd

"চরিত্র নষ্ট করার জন্য যা দরকার সব আপনার হাতের কাছেই!"

চরিত্র নষ্ট করার জন্য যা দরকার সব আপনার হাতের কাছেই! আজকাল ‘চরিত্র নষ্ট’ শব্দটা শুনলেই অনেকে হাসে, কেউ কেউ রেগে যায়, আর কিছু মানুষ একে নিছক পুরনো দিনের কনসেপ্ট বলে উড়িয়ে দেয়। কিন্তু সত্যি কথা বলতে কী, এই ‘চরিত্র’ জিনিসটা এখন এমনভাবে ডিজিটাল দুনিয়ার হাতে পড়ে গেছে, যে আপনার চাইলেও আপনি এর থেকে বাঁচতে পারবেন না। কেন? কারণ চরিত্র নষ্ট করার জন্য আজ যা যা দরকার, সবই এখন আপনার হাতের মোবাইলেই আছে।
"Everything you need to destroy character is at your fingertips!"
চলেন একটু খোলামেলা কথায় আলোচনা করি। কোনো জজমেন্টাল মনোভাব ছাড়াই, শুধু বাস্তবটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করি।

 মোবাইল ফোন – সর্বনাশের হাতিয়ার!

একটা সময় ছিল, যখন মানুষকে চরিত্রহীন করতে হলে অন্তত কিছু খাটাখাটনি করতে হতো – প্রলোভন, ঘনিষ্ঠতা, সুযোগ খোঁজা ইত্যাদি। এখন আর কষ্ট করতে হয় না। একটাই স্মার্টফোন থাকলেই হলো।
  • ইন্টারনেট, ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক – এই পাঁচটা জিনিস থাকলেই আপনি চাইলে নিজে নষ্ট হতে পারেন, আবার অন্যকেও টেনে নিতে পারেন।
  • যেকোনো বয়সের ছেলে-মেয়ে, চাইলেই রাতারাতি ‘বোল্ড’ কনটেন্টে ঢুকে পড়ে। আর তারপরে কি হয়, সেটা আমরা সবাই জানি – আসক্তি, মূল্যবোধের পতন, আত্মসম্মানহীন সম্পর্ক।

চোখ-কান-হৃদয় খোলা রাখলেই সর্বনাশ নিশ্চিত

আগে মানুষ character strong করতে লাইব্রেরি যেত, এখন গুগল করে কীভাবে character loose করা যায় সেটাই খোঁজে।
  • আজকাল relationship মানেই physical attachment,loyalty বলে কিছু নেই। আর সবচেয়ে মজার কথা কী জানেন? এগুলা সবাই জানে, তাও কেউ থামে না।
  • মন চাইলেই এখন প্রাক্তনের সাথে কনট্যাক্ট, নতুন কারো সাথে চ্যাট, রাত জেগে স্ন্যাপচ্যাট– এসব কি একটু একটু করে মানুষের character কে ধ্বংস করে না?

প্রেম মানেই এখন বডি, না মাইন্ড?

আগে প্রেম মানে ছিল – ‘তুই আজ খাইছিস?’, ‘তুই কেমন আছিস?’, ‘তোর চোখ কাঁদছে কেন?’ এখন প্রেম মানেই – ‘তোর ছবি দে’, ‘ভিডিও কল কর’, ‘টু পিস পরছিস তো?’ কিংবা ‘চলো এক রাত কাটাই’।

বডির প্রেম এখন এত সহজ আর মাইন্ডের প্রেম এতই কঠিন হয়ে গেছে যে মানুষ character বলতে এখন শুধু ‘status’ বোঝে।

সিনেমা-সিরিজ-শর্টস: চরিত্র নষ্টের ট্রেনিং সেন্টার!

একটা সময় ছিল সিনেমা শিখাতো – ভালোবাসা মানে ত্যাগ। এখনকার সিনেমা আর ওয়েব সিরিজ শেখায় – ভালোবাসা মানে ‘one-night’।

Netflix, Hoichoi, Binge, YouTube Originals, TikTok Shorts – যেখানে সেখানে কিস, বিছানা, এক্সট্রা-ম্যারিটাল প্রেম। এগুলা দেখে দেখে এখন ছোট ছেলেরাও প্রেম এক্সপার্ট হয়ে যাচ্ছে।

আর মেয়েরা ভাবছে – “আমি যদি 'bold' না হই, তাহলে হয়তো ছেলেরা আমাকে পছন্দই করবে না।”

আপনি নিজেই আপনার ফাঁদ

আজকাল character নষ্ট হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ আপনি নিজেই। কারণ আপনি জানেন কোনটা ভুল, কোনটা সঠিক। তবুও আপনি ভুলটার দিকেই যাচ্ছেন।

কেন? কারণ সেটা আনন্দ দেয়। তাড়াতাড়ি আনন্দ দেয়। কিন্তু যেটা character গড়ে তোলে, সেটা কষ্ট দেয়, সময় নেয়। তাই মানুষ শর্টকাটে গিয়ে character-টাই নষ্ট করে।

চারপাশে সবাই যেন influencer!

সোশ্যাল মিডিয়াতে এখন কেউ ভালো কিছু করলে ১০০ লাইক, আর যদি কিছু ‘বোল্ড’ বা ‘অসামাজিক’ করে, তাহলে ১০০০ লাইক! ইনফ্লুয়েন্সারদের মেকআপ, রিলেশনশিপ ড্রামা, ব্রেকআপ-ভাঙা গানের রিল – এগুলা দেখে আজকের জেনারেশন character শেখার বদলে character হারানোর দিকেই ঝুঁকছে।

ছোট ছোট মেয়েরা এখন 'ক্যামেরা কিউটনেস' শিখে ফেলছে, কিন্তু 'লজ্জা' নামক শব্দটা ভুলে যাচ্ছে।

ধর্ম-বিশ্বাস = অল্ড ফ্যাশন?

আগে character বলতে বুঝাতো – কারো মা-বাবার সম্মান, ধর্মীয় মূল্যবোধ, সামাজিক নিয়ম। এখন character মানে – 'মাই বডি, মাই চয়েজ'। কেউ আর বলে না – ‘আল্লাহ দেখছেন’, কেউ ভাবে না – ‘এই কাজটা করলে ভবিষ্যতে কী হবে?’।

আবার যাদের একটু ধর্মীয় ধারনা আছে, তারাও character নিয়ে কথা বললে 'ব্যাকডেটেড' বলে গাল খায়।

TikTok, Reels, & Viral Culture

  • প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে TikTok না দেখলে চলে না।
  • নাচ, শরীর দেখানো, সেক্সি ডায়ালগে ভিডিও বানানো, গান-লিপিং, প্রেমের ডায়ালগে acting – এগুলা এখন character গঠনের না, character হারানোর সবচেয়ে সহজ রাস্তা। আগে character দেখে মানুষ প্রেম করতো, এখন ভিডিও দেখে প্রেম করে।

অভিভাবকরা নিঃশব্দ

বাচ্চা কোথায় যাচ্ছে, কী করছে – এসব নিয়ে এখন বাবা-মা’র মাথাব্যথা নেই। স্কুলে গিয়েছে, না প্রেম করতে গিয়েছে – কেউ জানে না। বাচ্চা যখন character হারায়, তখন কাঁদে মা-বাবা, কিন্তু character গঠনের সময় তারা ব্যস্ত ছিল টিভি সিরিয়ালে বা ফেসবুকে।

রক্ষা কীভাবে?

এতকিছুর পরে প্রশ্ন আসে – তাহলে বাঁচবো কীভাবে?
  • 🔹 নিজেকে চিনুন – আপনি কী চান? অস্থায়ী সুখ, নাকি স্থায়ী সম্মান?
  • 🔹 সীমা নির্ধারণ করুন – যেকোনো সম্পর্ক, যেকোনো কাজের একটা লিমিট থাকা দরকার।
  • 🔹 বাস্তব সম্পর্ক গুরুত্ব দিন – ভার্চুয়াল প্রেমে না গিয়ে বাস্তব মানুষের পাশে থাকুন।
  • 🔹 বিশ্বাসে থাকুন – ধর্ম, মা-বাবা, নিজের মূল্যবোধ ধরে রাখুন।
  • 🔹 সময় অপচয় না করে সময়কে গঠনমূলক কাজে ব্যবহার করুন – পড়াশোনা, স্কিল শেখা, মানুষের উপকার।

উপসংহার

এই পোস্ট লেখার উদ্দেশ্য কাউকে অপমান করা নয়। উদ্দেশ্য একটাই – চোখ খোলা রাখা। কারণ character একবার নষ্ট হলে সেটা আর আগের মত ফিরে আসে না। আজকের দুনিয়ায় character বাঁচিয়ে চলাটা একটা যুদ্ধ। এই যুদ্ধটা আপনি যদি জিততে পারেন, তখনই আপনি আসল বিজয়ী। ভালো character মানেই শুধু নৈতিকতা নয়, সেটা আপনার জীবনের পাথেয়। character না থাকলে আপনি কিছুই না – না প্রেমে, না পরিবারে, না সমাজে, না ধর্মে। তাই বলি, যা দরকার সব আপনার হাতেই আছে – কিন্তু সেটা character  বানানোর জন্য ব্যবহার করবেন, না নষ্ট করার জন্য, সেটা আপনি ঠিক করুন।
---

✍️ লেখক মন্তব্য:

বন্ধুরা, যারা এখনো character এর মানে বোঝেন না, তারা দয়া করে অন্তত কিছুদিন নিজের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ভাবুন – "আমি আসলেই কে?" যদি এই লেখা একটুও আপনার হৃদয়ে লেগে থাকে, তাহলে সেটাই আমার প্রাপ্তি।  ভালো থাকুন, character-fully থাকুন। 🌿

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

কাজীআরিফুল ডট কমে নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url